বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সর্বস্তরে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণের জন্য জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জেলা কার্যালয়, মুন্সীগঞ্জের উদ্যোগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি. তারিখ সকাল ১১.০০ ঘটিকায়, মুন্সীগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ, মুন্সীগঞ্জ এ নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টির জন্য শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সচেতনতামূলক কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত কর্মসূচীতে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মারুফা হক, নিরাপদ খাদ্য অফিসার,বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, মুন্সীগঞ্জ।
সামগ্রিক কার্যক্রম:
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক কর্মসূচীর উদ্বোধন ও স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জনাব মারুফা হক, নিরাপদ খাদ্য অফিসার, মুন্সীগঞ্জ। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ও টিভিসি এর মাধ্যমে তিনি নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মিশন ও ভিশন নিয়ে আলোচনা করেন। ফসলের মাঠ থেকে ভোক্তার টেবিল পর্যন্ত প্রতিটি স্তরেই যেন খাদ্যের নিরাপদতা নিশ্চিত করা যায় সে লক্ষ্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান। তিনি নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি নিরাপদ খাদ্য, সুষম খাদ্য ও ভেজাল খাদ্য নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেন। পোড়াতেলে তৈরী খাবার, পোড়ানো মাংসে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পলি এরোমেটিক হাইড্রোকার্বন; চটপটি, ফুচকায় রোগ জীবানু,ঝালমুড়ি, আচার ইত্যাদি খাবার খবরের কাগজে না খাওয়া সম্পর্কে সচেতন করেন। খাবার গ্রহণের পূর্বে হাত ভালোভাবে সাবান দিয়ে ধোয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। শিক্ষার্থীরা বাইরের খোলা খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হয়। যার ফলে তারা নানাবিধ পেটের পীড়ায় ভুগে থাকে যা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তাছাড়া অনিরাপদ পানি দিয়ে তৈরী এসব খাবার খেয়ে পানিবাহিত রোগজীবানু দ্বারা শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হয়। তাই রাস্তার খোলা খাবার যেমন চটপটি, ফুচকা, খবরের কাগজে দেয়া ঝালমুড়ি, অনুমোদনহীন রঙ দিয়ে তৈরী খাবার ইত্যাদি যাতে না খায় সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার নির্দেশনা প্রদান করেন। তাছাড়া তিনি কিছু ভ্রান্ত ধারণা নিয়েও আলোচনা করেন। যেমন ফল ও শাক-সবজিতে ফরমালিন, , প্লাস্টিকের ডিম, প্লাস্টিকের চাউল, তরমুজে রঙ ইত্যাদি ভ্রান্ত ধারনা দূর করার জন্য তিনি উপস্থিত সবাইকে অবগত করেন। তিনি বলেন নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে তাই তিনি উপস্থিত সবাইকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে যারা খোলা খাবার বিক্রয় করেন তাদের খবরের কাগজ ব্যবহার না করা, নিরাপদ পানি ব্যবহার করা এবং স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে খাবার তৈরী ও পরিবেশন করার বিষয়ে সচেতন করার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে কেউ যাতে অনিরাপদ খাবার বিক্রি করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য তিনি উপস্থিত সবাইকে অনুরোধ জানান। পাশাপাশি টিভিসি হতে প্রাপ্ত নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জ্ঞান ও তথ্যসমূহ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যেন তাদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেয় সে বিষয়ে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান করেন। এরপর শিক্ষার্থীদের মাঝে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক পারিবারিক নির্দেশনা, লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ করা হয়।
জনাব আসিফ আল আজাদ, সহকারী পরিচাল্ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মুন্সীগঞ্জ বলেন একটি সুস্থ ও সুন্দর জাতি গঠনের জন্য নিরাপদ খাদ্যের কোন বিকল্প নেই। প্রতিটি শিক্ষার্থীকেই নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। খাবার খাওয়ার পূর্বে ও পরের নিয়মাবলী যথাযথভাবে অনুসরন করার জন্য শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা প্রদান করেন। বাইরের খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা প্রদান করেন। এই সচেতনতামূলক কর্মসূচী থেকে প্রাপ্ত নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জ্ঞান ও তথ্য সমূহ পরিবারের ও প্রতিবেশিদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্যেও তিনি শিক্ষার্থীদেরকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
জনাব প্রফেসর মো: আব্দুল হামিদ মোল্লা, প্রিন্সিপাল, মুন্সীগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ, মুন্সীগঞ্জ বলেন আজকের শিক্ষার্থীদের হাতেই আগামীর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তাই দেশকে সুন্দর ভাবে গড়ার জন্য যেমন সুশিক্ষার প্রয়োজন তেমনি সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য নিরাপদ খাদ্য প্রয়োজন। তিনি শিক্ষার্থীদের নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রতিটি নির্দেশনা মেনে চলার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক পারিবারিক নির্দেশনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পড়ার ও নির্দেশনাগুলো মেনে চলার জন্য শিক্ষার্থীদের পরামর্শ প্রদান করেন।
সমাপনী বক্তব্য:
জনাব মারুফা হক, নিরাপদ খাদ্য অফিসার, মুন্সীগঞ্জ সমাপনী বক্তব্যে বলেন নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব ও অনিরাপদ খাদ্যের ভয়াবহতা উপলদ্ধি করে সবাইকে অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের অনিরাপদ খাদ্য সংক্রান্ত যেকোন অভিযোগ বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের হটলাইন নাম্বার ১৬১৫৫ এ কল করে অভিযোগ জানানোর নির্দেশনা প্রদান করেন। এরপর উপস্থিত সকলের সর্বাঙ্গীন কল্যাণ কামনা করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস